স্টাফ রিপোর্টার: বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ আরো শক্তি সঞ্চয় করে বাংলাদেশ ও ভারত উপকূলের দিকে ক্রমেই অগ্রসর হচ্ছে। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে অগ্রসর হতে পারে। প্রবল আকারের এই ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামসুদ্দিন আহমেদ আজ বুধবার সকালে বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি (রিপোর্টের সময় অবস্থান) মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে থাকলেও তার প্রবলতা, ব্যাপকতা এবং আকারের কারণে সতর্ক সংকেত বাড়ানো হয়েছে। সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখানো হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশেও আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১১ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাতে বা ১২ অক্টোবর (শুক্রবার) ভোরে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
‘ভারতের উড়িষ্যা-অন্ধ্রপ্রদেশ-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের খুলনা, সুন্দরবন হয়ে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর অঞ্চলের উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বয়ে যেতে পারে। অবশ্য স্থলে আসার পর সেটি দুর্বল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবুও মানুষের যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য আগেই ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, গত দু’দিন থেকে পর্যবেক্ষণ করে প্রথমে ১ নম্বর, মঙ্গলবার ২ নম্বর এবং বুধবার ৪ নম্বর সংকেত দেওয়া হয়। আর আজকের দিন পর্যবেক্ষণ করে বোঝা যাবে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি। তখন সতর্ক সংকেত বাড়বে কিনা তা জানানো হবে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক বলেন, এটি একটি বড় আকারের ঘূর্ণিঝড়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অংশের উপর যে মেঘমালা তা ঘূর্ণিঝড়ের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। এই মেঘমালা বঙ্গোপসাগর ছাড়াও বাংলাদেশের বিশাল অংশের উপর ছড়িয়ে আছে।
তবে এখনও ঘূর্ণিঝড় চূড়ান্ত প্রস্তুতির সময় আসেনি বলে জানান আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামসুদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, আবহাওয়া অধিদফতর ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে।
আবহাওয়া অধিদফতর সর্বশেষ (১০ নং) বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কি.মি.। যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১১০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র প্রভাবে ভারতের উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। প্রবল বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কাও করেছে স্থানীয় আবহাওয়া অধিদফতর। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ।